খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  কুমিল্লার বুড়িচংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু
  সকালে শিক্ষা উপদেষ্টা, বিকালে কুয়েটে আসছেন ইউজিসি প্রতিনিধি দল
  কুয়েটে অনশনের ৪০ ঘণ্টা : ৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ, দুর্বল হয়ে পড়ছেন আন্দোলনরত ২৬ জন

যশোরে স্ত্রীকে ভারতে পাচারের পর হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে স্ত্রীকে ভারতে পাচারের পর হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং মানবপাচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গোলাম কবির এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের পিপি আব্দুল লতিফ লতা।

সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামরুল ইসলাম যশোর সদর উপজেলার বানিয়ারগাতি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে। ভিকটিম সালমা খাতুন সদরের বসুন্দিয়া মোল্লাপাড়ার ইশারত আলী মোল্লার মেয়ে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের সালমার সাথে কামরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিনি সালমাকে ভরনপোষন দেন না। এছাড়া ব্যাপক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন। এক পর্যায় পারিবারিকভাবে বিষয়টি মীমাংসার জন্য বলা হলে কামরুল ও তার স্ত্রী ঢাকায় গিয়ে চাকরি করে সংসার চালাবেন বলে জানায়। এ জন্য সালমাকে চাপ প্রয়োগ করে। ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল দুপুরে সালমাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন কামরুল। এরপর থেকেই দুইজনের মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে দেয়া হয়। চিন্তিত হয়ে সালমার পরিবার বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি শুরু করে। কিন্তু কোথাও তাদের সন্ধান পাওয়া যায় না। ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল সালমা ভারত থেকে মোবাইল ফোনে জানায় তাকে ঢাকায় না নিয়ে ভারতের গুজরাট রাজ্যের আনন্দ জেলায় নিয়ে গেছে কামরুল। এছাড়া একটি ঘরে তাকে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে সালমা পরিবারকে তাকে উদ্ধারের জন্য অনুরোধ জানান। ওই বছরের ৬ মে ফের সালমা পরিবারের কাছে ফোন করে জানায় কামরুল তাকে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। ওই ব্যক্তি তার উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। একই দিন রাতে কামরুল সালমার বাবাকে কল করে জানায় সালমার অবস্থা ভালো না। সে খুব বিপদে রয়েছে। শেষমেষ জানায় সালমাকে ফেলে কামরুল দেশে চলে এসেছেন। দুইদিন পর ৮ মে সালমার বাবা শহিদুল ইসলাম কামরুলের বাড়িতে যেয়ে কামরুলকে জিজ্ঞাস করলে কামরুল খারাপ ব্যবহার করে। একই সাথে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে শহিদুল তার এক আত্বীয়র মাধ্যমে ভারতে খোঁজ খবর নেন কিন্তু সালমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এক পর্যায় শহিদুল কোতোয়ালি থানায় কামরুলের বিরুদ্ধে মানবপাচার অপরাধ ও দমন আইনে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। মামলাটি তদন্ত করে এসআই অমিত কুমার দাস ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন। তদন্তে উঠে আসে ভারতে অবস্থানকালে সালমার সাথে দ্বন্দ্ব হয় কামরুলের। এক পর্যায় পেয়াজ রসুন বাটা হামান দিস্তার ডাটি দিয়ে সালমার মুখে আঘাত করে কামরুল। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায় সালমা। এরপর সালমার ওড়না দিয়ে সালমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কামরুল। শেষমেষ ওই ঘরের মধ্যে মরদেহ তালা মেরে সালমার পাসপোর্ট নিয়ে দেশে চলে আসে কামরুল। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ও এ ঘটনায় গুজরাটের ভালেজ থানায় মামলা হয়।

মঙ্গলবার এ মামলার রায় ঘোষনার দিনে আসামির উপস্থিতিতে বিচারক যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!